নিউজ ডেস্ক::
রোহিঙ্গা ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়েছে গত ২৩ নভেম্বর। রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর তাণ্ডবে পালিয়ে এসে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়ে আছে ছয় লাখ ২৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। এখন প্রশ্ন, ঠিক কী কারণে চুক্তির পরেও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে না?
বাংলাদেশ চায় স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেবে। তবে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয়ে থাকা মানুষ আসলেই মিয়ানমারে নাগরিক কি-না তা যাচাই করে ফিরিয়ে নিতে চায় দেশটি।
অন্যদিকে জাতিসংঘ চায়, আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে রোহিঙ্গা ফেরাতে হবে। এমনকি রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরার মতো পরিস্থিতি নেই বলেও অভিযোগ করেছে জাতিসংঘ।
রোহিঙ্গা ফেরানোর চুক্তি হলেও নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি। আবার রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করার কাজও শুরু করেনি শান্তিতে নোবেল জয়ী নেত্রী অং সান সুচির দেশ।
ব্রিটিশ সরকারের একটি প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে কীভাবে মিয়ানমার সরকার নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়টি পরিবর্তন করেছে। অথচ সু চির সরকারের দাবি, বৈধ প্রমাণ দেখাতে পারলে তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে।
১৯৮৯ সালের ওই আইনে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। ফলে হাজার বছর ধরে রাখাইনে থেকেও রোহিঙ্গারা সেখানে অবৈধ হয়ে যায়।
এমনকি বেশিরভাগ রোহিঙ্গার কাছে সরকারি কোনো নথিপত্রও নেই। বাড়িঘরে আগুন লাগার মধ্যেই অনেকে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসেছেন। সেই সময় পরিবারের বৃদ্ধ লোক, ছেলে মেয়েকে নিয়ে পালানোর বাইরে কাগজপত্র নেয়ার মতো পরিস্থিতি তাদের ছিল না।
অন্যদিকে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে, গরু-ছাগল, ফসল নিয়েছে বৌদ্ধরা। একেবারে শ্মশান হয়ে পড়েছে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো।
সে কারণে রোহিঙ্গাদের ফেরানো হলে তারা নিজেদের গ্রামে যেতে পারবে নাকি অন্য কোথাও তাদের রাখা হবে সেটাও পরিষ্কার নয়।
মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিদিন তিনশর বেশি শরণার্থী তারা ফিরিয়ে নিতে পারবে না। সেই হিসেবে রোহিঙ্গা ফেরাতে সাড়ে পাঁচ বছরের মতো সময় লেগে যাওয়ার কথা।
সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস
পাঠকের মতামত